Wednesday 28 December 2011

azam khan

মুক্তিযোদ্ধা গায়ক গুরু আজম খানপুরো নাম: মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান।
মায়ের নাম: মৃত জোবেদা খানম।
বাবার নাম: মৃত মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন খান।
বাবার পেশা: অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার, সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্ট। ব্যক্তিগতভাবে হোমিওপ্যাথির চিকিৎসক ছিলেন।
জন্ম ও জন্মস্থান:
জন্ম: ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০
জন্মস্থান: ১০ নম্বর সরকারি কোয়ার্টার, আজিমপুর কলোনি, ঢাকা।
ছেলেবেলা
১৯৫৫ সালে প্রথমে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে বেবিতে ভর্তি হন।
১৯৫৬ সালে কমলাপুরের প্রভেনশিয়াল স্কুলে প্রাইমারিতে ভর্তি হন।
১৯৬৫ সালে সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন।
১৯৬৮ সালে এসএসসি পাস করেন।
১৯৭০ সালে টি অ্যান্ড টি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন।
১৯৫৬তে তার বাবা কমলাপুরে বাড়ি বানান।
পারিবারিক জীবন
বিয়ে করেছিলেন ১৯৮১ সালের ১৪ জানুয়ারি ঢাকার মাদারটেকে। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩১ বছর।
স্ত্রীর নাম: সাহেদা বেগম।
প্রথম সন্তান: ইমা খান।
নাতনি: কায়নাত ফাইরুজ বিনতে হাসান।
দ্বিতীয় সন্তান: হূদয় খান।
তৃতীয় সন্তান: অরণী খান।
বর্তমান ঠিকানা: ২ নম্বর কবি জসীমউদ্দীন রোড, কমলাপুর, ঢাকা-১২১৭।
বড় ভাই: সাইদ খান।
পেশা: সরকারি চাকরিজীবী।
মেজো ভাই: আলম খান।
পেশা: গীতিকার ও সুরকার।
ছোট ভাই: লিয়াকত আলী খান। মুক্তিযোদ্ধা।
পেশা: ব্যবসায়ী।
ছোট বোন: শামীমা আক্তার খানম।
সহধর্মিনী মারা যাবার পর থেকে একাকী জীবন।
উপাধি:
পপসম্রাট আজম খান
কিংবদন্তি আজম খান
গুরু নামে খ্যাত।
মুক্তিযোদ্ধা আজম খান
১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত প্রচার করেন।১৯৭১ সাকে আজম খানের বাবা আফতাব উদ্দিন খান সচিবালয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।বাবার অনুপ্রেরণায় যুদ্ধে যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন আজম খান। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি পায়ে হেঁটে আগরতলা চলে যান।আগরতলার পথে তার সঙ্গী হন তার দুই বন্ধু। এসময় তার লক্ষ্য ছিল সেক্টর ২ এ খালেদ মোশাররফের অধীনে যুদ্ধে যোগদান করা। আজম খান মুক্তি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন ২১ বছর বয়সে। তার গাওয়া গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণ যোগাতো। তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ভারতের মেলাঘরের শিবিরে।যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে তিনি তিনি কুমিল্লায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সমুখ সমরে অংশ নেয়া শুরু করেন।কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধ করেন। এর কিছুদিন পর তিনি পুনরায় আগরতলায় ফিরে আসেন। এরপর তাকে পাঠানো হয় ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য। আজম খান ছিলেন দুই নম্বর সেক্টরের একটা সেকশনের ইনচার্জ।আর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল খালেদ মোশাররফ। ঢাকায় তিনি সেকশান কমান্ডার হিসেবে ঢাকা ও এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন। আজম খান মূলত যাত্রাবাড়ি-গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশান গুলো পরিচালনার দায়িত্ব পান। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল তার নেতৃত্বে সংঘটিত “অপারেশান তিতাস” । তাদের দায়িত্ব ছিল ঢাকার কিছু গ্যাস পাইপলাইন ধ্বংস করার মাধ্যমে বিশেষ করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (বর্তমান শেরাটন হোটেল) , হোটেল পূর্বানীর গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটানো। তাদের লক্ষ্য, ঐ সকল হোটেলে অবস্থানরত বিদেশি রা যাতে বুঝতে পারে যে দেশে একটা যুদ্ধ চলছে।এই যুদ্ধে তিনি তার বাম কানে আঘাতপ্রাপ্ত হন সেটি এখনো তার শ্রবণক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটায়।আজম খান তার সঙ্গীদের নিয়ে পুরোপুরি ঢাকায় প্রবেশ করেন ১৯৭১ এর ডিসেম্বারের মাঝামাঝি। এর আগে তারা মাদারটেকের কাছে ত্রিমোহনী তে সংগঠিত যুদ্ধে পাক সেনাদের পরাজিত করেন।
গায়ক আজম খান
আজম খানের কর্মজীবনের শুরু প্রকৃতপক্ষে ৬০ দশকের শুরুতে। ৭১ এর পর তার ব্যান্ড উচ্চারণ এবং আখন্দ ( লাকী আখন্দ এবং হ্যাপী আখন্দ ) ভাতৃদ্বয় দেশব্যাপী সংগীতের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে। বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটারে, সাদেক ড্রামে আর নিজেকে প্রধান ভোকাল করে করলেন অনুষ্ঠান। তারপর একদিন বিটিভিতে প্রচার হলো সেই অনুষ্ঠান। সেটা ৭২ সালের কথা। ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ আর ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচার হলো বিটিভিতে। ব্যাপক প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দিলো এ দুটো গান। দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে গেলো তাদের দল আজম খান ১৯৭৪-১৯৭৫ সালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে বাংলাদেশ ( রেললাইনের ঐ বস্তিতে) শিরোনামের গান গেয়ে হইচই ফেলে দেন।তার পাড়ার বন্ধু ছিলেন ফিরোজ সাঁই। পরবর্তীতে ওর মাধ্যমে পরিচিত হন ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, পিলু মমতাজ এদের সাথে। এক সাথে বেশ কয়েকটা জনপ্রিয় গান করেন তারা। এরই মধ্যে আরেক বন্ধু ইশতিয়াকের পরামর্শে সৃষ্টি করেন একটি এসিড-রক ঘরানার ‘জীবনে কিছু পাবোনা এ হে হে!আজম খানের দাবী এটি বাংলা গানের ইতিহাসে- প্রথম হার্ডরক।

আজম খানের অ্যালবামসমূহ:
১. দিদি মা
২. বাংলাদেশ
৩. কেউ নাই আমার
৪. অনামিকা
৫. কিছু চাওয়া
৬. নীল নয়না।
৭. গুরু তোমায় সালাম(এটি গুরুর মৃত্যুর পর আগস্ট,২০১১ এ প্রকাশিত হয়। এতে গুরুর কন্ঠ রয়েছে তিনটি গানে।)
আজম খানের জনপ্রিয় গান:
১. রেল লাইনের ঐ বস্তিতে
২. ওরে সালেকা, ওরে মালেকা
৩. আলাল ও দুলাল
৪. অনামিকা
৫. অভিমানী
৬. আসি আসি বলে
৭. এত সুন্দর দুনিয়ায়
অন্যান্য ভূমিকায় আজম খান
১৯৯১—২০০০ সালে তিনি প্রথম বিভাগ ক্রিকেটখেলতেন গোপীবাগ ফ্রেন্ডস ক্লাবের হয়ে।
মৃত্যু
পপসম্রাট গুরু আজম খান ৬১ বছর বয়সে ৫ জুন,২০১১ ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ওড়াল ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন যা পরে তা তার ফুসফুসে ছড়িয়ে পরে। বাংলাদেশের পপ সঙ্গীতের আরেক স্রষ্টা পিলু মমতাজের মৃত্যুর ১৪ দিন আমরা পপ গুরু আজম খানকে হারাই।
লাইভ সাক্ষাৎকারঃ
তাঁর মৃত্যুর কয়েকবছর আগে বিবিসিতে দেয়া তার সাক্ষাৎকারটি শুনতে পারবেন এখানেঃ  BBC Interview। সবাই সাক্ষাৎকারটি শুনে দেখবেন।
তাঁকে নিয়ে Maqsood O’ dHAKA’র মাকসুদুল হকের লেখা পড়তে পারেন এখানেঃ The making of an icon



Ek potaka tolo by Habib

যতই গভীর দেখ রাতের আঁধার কেন ভাব সে ঘোর কাটবেনা আর যতই স্রোতের হোক সে নদী অপার আমাদের থেকে জোর কে পারে সাঁতার তফাৎ অনেক আছে জানি আছে দূ...